করোনা : ৬ শর্তে দেয়া হলো শুটিংয়ের অনুমতি

করোনাভাইরাইসকে প্রতিরোধ করতে ঘরে বসেই দিন কাটাচ্ছেন মানুষ। অনেক দিন থেকেই বন্ধ সকল ধরনের শুটিং। তবে ঈদের আগেই শুটিংয়ের অনুমতি মিলুক এমনটা চাইছিলেন বেশ কিছু মিডিয়ার মানুষ। অবশষে করোনায় সৃষ্ঠ নির্মাতা-শিল্পী ও কলাকুশলীদের অভাব দূর করতে শুটিংয়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার দিবাগত রাতে টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ডিরেক্টরস গিল্ড, অভিনয় শিল্পী সংঘসহ সংশ্লিষ্ট আরও সংগঠনের নেতাদের যৌথ সিদ্ধান্তে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। বৈঠক শেষে ১৫ মে দিবাগত রাতে বিষয়টি জানায় ডিরেক্টরস গিল্ড। ১৭ মে থেকে যে কেউ চাইলে শুটিংয়ে অংশ নিতে পারবেন।

ডিরেক্টর গিল্ড সূত্রে জানা গেছে, কেউ শুটিংয়ে অংশ নিতে চাইলে ছয়টি শর্ত পালন করতে হবে। সেগুলো হলো-
১। আন্তঃসংগঠনের পক্ষ থেকে করোনাকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাইডলাইন অনুসরণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। শুটিং বিষয়ক স্বাস্থ্যবিধির তথ্যাবলি স্ব স্ব সংগঠন থেকে সংগ্রহ করে সেই নিয়মে শুটিং করতে হবে।

২। লকডাউনের সময় সরকারি সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমতি সংগ্রহ করে শুটিং করতে হবে।
শিল্পী, কলাকুশলীরা শুটিং সংশ্লিষ্ট যে কোনও ধরনের কাজ নিজ দায়িত্বে সম্পন্ন করবেন। এর সাথে আন্তঃসংগঠন বা স্ব স্ব সংগঠন কোনোভাবেই সম্পৃক্ত থাকবে না।

৩। শুটিং করতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব হলে, অথবা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে আন্তঃসংগঠন বা স্ব স্ব সংগঠন কোনও দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করবেন না। সম্পূর্ণ দায় বর্তাবে সংশ্লিষ্ট প্রযোজক, পরিচালক, অভিনয়শিল্পী, চিত্রগ্রাহক, রূপসজ্জাশিল্পীসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিটের সবার।

৪। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি এবং আন্তঃসংগঠনের সিদ্ধান্ত ভালোভাবে অবগত হয়ে যারা শুটিং করতে আগ্রহী সেই শিল্পী, কলাকুশলী, প্রযোজক স্ব স্ব সংগঠনের সভাপতি/ সাধারণ সম্পাদক বরাবর এই মর্মে ক্ষুদে-বার্তা অথবা ইমেইল পাঠাবেন। যেখানে লিখতে হবে, ‌‌‘আমি দুর্যোগকালীন সময়ে আন্তঃসংগঠনের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত হয়ে নিজ দায়িত্বে স্বেচ্ছায় শুটিংয়ে অংশগ্রহণ করছি। আমি সংকটে নিপতিত হলে এর দায়ভার সম্পূর্ণভাবে আমার।’

৫। সরকার পরিস্থিতি বিবেচনায় যে ঘোষণা দেবেন সকলকে সেটা মেনে নিয়ে কাজ করতে হবে। অথবা কাজ‌ বন্ধ রাখার পরিস্থিতি উদ্ভব হলে তা বন্ধ করতে হবে।

৬। আন্তঃসংগঠন এই শিথিল সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি বিবেচনায় যে কোনও সময় বাতিল করতে পারে। আন্তঃসংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের যৌথ ভাষ্যে, ‘সকলের কাজ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি আমরা। পাশাপাশি এও মনে করি সবকিছুর ঊর্ধ্বে জীবন।

ডিরেক্টর গিল্ডের সভাপতি অভিনেতা-নির্মাতা সালাউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘‌‌করোনা পরিস্থিতি বর্তমান সময়ে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ফলে আন্তঃসংগঠনসমূহ এই সময়ে শুটিং সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্থগিত রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও, সেটি রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।

কারণ, সরকার সাময়িকভাবে লকডাউন শিথিল করেছে। ফলে কিছু সংখ্যক শিল্পী কলাকুশলী প্রযোজক নাটক নির্মাণ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে সংশ্লিষ্ট সংগঠনে অনুরোধ করেন। তাদের জন্য আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কেউ চাইলে এই শর্তগুলো মেনে শুটিং করতে পারেন।’

শুক্রবার মধ্যরাতে আন্তঃসংগঠনের এমন সিদ্ধান্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচণ্ড হতাশা প্রকাশ করেছেন বেশিরভাগ শিল্পী-কুশলীরা। বলছেন, চলমান মহামারিতে ঈদের আগে এই সিদ্ধান্ত মোটেই যৌক্তিক নয়।
অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম বলেন, ‘আমি এখন শুটিংয়ে যাবো না। তবে যারা এখনই শুটিং করতে খুব করে চাচ্ছেন তাদের জানাই ঈদ মোবারক।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *