‘চারটে বছর নষ্ট করেছি তবে..

টলিউডের প্রথম সারির নায়িকা তিনি। তাঁর রূপের জাদুতে মুগ্ধ থাকে নেটপাড়া। পেশাদার জগতে যেমন সফল, তেমনই ব্যক্তিগত জীবনেও সুখী তিনি। কথা হচ্ছে অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের। পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে সুখী গৃহকোণ শুভশ্রীর, ছেলে ইউভানকে নিয়ে দারুণ সময় কাটছে ‘রাজশ্রী’র। তাঁদের প্রেমে ভরা সংসারের টুকরো ঝলক হামেশাই ধরা পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

তবে বছর কয়েক আগে শুভশ্রীর জীবনে এসেছিল একটা ঝড়। কেরিয়ারের শুরুতে প্রেমে পড়েছিলেন শুভশ্রী। প্রেমিকের নামটাও কারুর অজানা নয়। টলি সুপারস্টার দেবের সঙ্গে শুভশ্রীর প্রেম সম্পর্ক একটা সময় ছিল টলিপাড়ার ওপেন সিক্রেট। প্রকাশ্যে কোনওদিন সম্পর্কের কথা সেভাবে স্বীকার করেননি তাঁরা, তবে প্রেম ভাঙার পর সবটা পরিষ্কার হয়েছিল। অনস্ক্রিনের এই হিট জুটির সফর শুরু ‘চ্যালেঞ্জ’ থেকে তারপর ‘পরাণ যায় জ্বলিয়া রে’, ‘খোকাবাবু’, ‘রোমিও’- একসঙ্গে রুপোলি পর্দা কাঁপিয়েছেন তাঁরা। কেন ভেঙেছিল এই প্রেম? সেই উত্তর কারুর জানা নেই। তবে বছর কয়েক আগে দেবের নাম না করেই কেরিয়ারের শুরুর দিনে প্রেমে ধাক্কা খাওয়া প্রসঙ্গে মুখ খুলেছিলেন শুভশ্রী।

বাবা-মা’র সঙ্গে দেব শঙ্কর হালদার পরিচালিত এক টক শো’তে হাজির ছিলেন শুভশ্রী। সেখানেই মনের ঝাঁপি খোলেন রাজ ঘরণী। তিনি বলেন, ‘আমার জীবনের এমন একটা পর্যায় এসেছিল যখন কাজ থেকে আমার ফোকাসটা একদম শিফট করে গিয়েছিল এবং সেটা কিন্তু আমার ডিসিশন ছিল। আফটার ‘পরাণ যায়…’ আমি কাজটা ছেড়ে দিয়েছিলাম।’

অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের
অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের

সঞ্চালক দেবশঙ্কর হালদার এই কথা শুনে শুভশ্রীকে পালটা জিজ্ঞেস করেন তিনি নিজের ইচ্ছেয় কাজ ছেড়েছিলেন না কি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন? শুভশ্রী জোর গলায় জানায় এই সিদ্ধান্তটা সম্পূর্ণ তাঁর নিজের ছিল। নায়িকার সংযোজন, ‘যেটার জন্য ডিসিশনটা নিয়েছিলাম সেই জিনিসটা যখন থাকলো না জীবনে তখন আমি বুঝতে পারলাম জীবনটা খুব অনিশ্চিত। কিন্তু আমি আফসোস করি না যে কেন আমি আমার চারটে বছর নষ্ট করেছি! আমি আমার বাবা-মার সাথে সব কথা শেয়ার করতে পারতাম না, আমি আমার খুশিটাই আমার বাবা-মার সাথে শেয়ার করতে চাই। ডেফিনেটলি ওরা বুঝতে পারতো!’

সেই সময় শুভশ্রীর মানসিক অবস্থা কী রকম হয়েছিল সেই নিয়েও আনকাট শুভশ্রী। তিনি বলেন বাবা-মায়ের সাথে বসে গল্প করতে করতেও তিনি পাঁচ মিনিট অন্তর বাথরুমে গিয়ে কেঁদে আসতেন। বাবা-মায়ের কাছ থেকে নিজের চোখের জল লুকোতেই তাঁর এই প্রচেষ্টা। এই আলাপচারিতায় একবারের জন্যও শুভশ্রী দেবের নাম নেননি। তবে কারুর বুঝতে অসুবিধা হয়নি, এখানে কাকে নিয়ে কথা বলছেন অভিনেত্রী।

এই ভিডিয়ো নতুন করে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ব্রেক-আপের সময় সেই মানুষটিকে কী বলেছিলেন শুভশ্রী? ‘ যেই সময় আমি জিরো হয়ে গিয়েছিলাম সেই সময় আমি ওই মানুষটিকে বলেছিলাম, দ্যাখো আমার জীবনে কিন্তু ইনসিকিউরিটি নেই। কারণ আমার হারানোর কিছু নেই। আমার কিছুই নেই। আর ভগবানের আর্শীবাদে আমরা কেরিয়ার তারপর থেকেই নতুন মোড় নেয়…’।

সম্পর্ক ভাঙায় মন ভেঙেছিল, তবে শুভশ্রীর বিশ্বাস অটুট ছিল ভালোবাসার প্রতি। এই মঞ্চেই তিনি বলেছেন, ‘ভালোবাসা অত্যন্ত পবিত্র একটা ইমোশন। একটা খারাপ অভিজ্ঞতার জন্য আমি ভালোবাসাকে দূরে ঠেলে দেব না’। মনের মানুষকে বিয়ে করতে চান, একজন ভালো মা হতে চান- এই ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন শুভশ্রী। নায়িকার সব স্বপ্নই সত্যি হয়েছে এই ভিডিয়োর কমেন্ট বক্সে বলছেন নেটিজেনরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *