যে গ্রামের মেয়েদের বিয়ে করতে চায় না ছেলেরা
ব্রাজিলের একটি প্রত্যন্ত গ্রাম- নোইভা ডো কোরডোইরো। গ্রামটি বেলো ভ্যালে পাহাড়ের নামের একটি উপত্যকায় অবস্থিত। যার অর্থ ‘সুন্দর উপত্যকা’। ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিও থেকে প্রায় ৩০০ মাইল উত্তরের উপত্যকাটি মিষ্টি কমল জাতীয় ফল, কলা গাছ আর উজ্জ্বল হলুদ ফুলের এক ধরনের গাছে ভরা।
তবে শুধু নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের কারণেই নয়, নোইভা ডো কোরডোইরো গ্রামিটির আরো একটি পরিচিতি রয়েছে। সেটি হলো গ্রামটির নারী। আসলে গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে বেশিরভাগ নারী। তাও আবার অবিবাহিত নারীদের দাপট। কেন এতো অবিবাহিত নারী, কারণ সেই গ্রামের মেয়েদের বিয়ে করতে চায় না কোন ছেলে।
কিভাবে নোইভা ডো কোরডোইরো গ্রাম নারী রাজত্বে পরিণত হলো তার রয়েছে মজার ইতিহাস। গ্রামটি সব মিলিয়ে ৬০০ নারী থাকেন। এর মধ্যে কয়েকজন বিবাহিত। বাকিরা অবিবাহিত। যাদের বিয়ে হয়েছে তারা গ্রামের বাইরে থাকে না। শুধু সপ্তাহে একবার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন তার। কারো পুত্র সন্তান হলে, ১৮ বছর হতেই গ্রামের বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
অথচ গ্রামটির সুন্দরী মেয়েরা ছেলেদের সঙ্গে প্রেম করার জন্য অস্থির হয়ে থাকেন। বিয়ে করতে চান। কিন্তু তাদেরকে বিয়ে করতে আগ্রহ দেখান না ছেলেরা। কেমন করে এই পরিস্থিতি? জানা গেছে, ১৮৯০ সালে মারিয়া সেনহোরিনা ডি লিমা নামের এক তরুণীকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু শ্বশুর বাড়িতে পা রেখেই সেখানে আর থাকেননি তিনি।
পালিয়ে চলে আসেন নোইভা ডো কোরডোইরো গ্রামে। ১৮৯১ সালে আসার পরে গ্রামটি নিজে হাতে গড়ে তোলেন ডি লিমা। তখন থেকেই গ্রামে একটি রেওয়াজ শুরু করেন। সেটি হলো, গ্রামের মেয়েদের বিয়ে হলে, তারা কেউ শ্বশুরবাড়িতে যেতে পারবে না। তাদের সঙ্গে স্বামীদের এই গ্রামেই বসবাস করতে হবে।
এখন পর্যন্ত ব্রাজিলের এই গ্রামের তরুণীরা সেই নিয়ম মেনে চলেন। তাই তাদের বিয়ের ইচ্ছে থাকলেও, মন মতো জীবনসঙ্গী খুঁজে পান না তাঁরা।
এক গ্রামেই বাকি জীবন কাটাতে হবে, এই ভয় তরুণীদের বিয়েও করতে চান না কেউ। এই নিয়মের কারণে বয়স পেরিয়ে গেলেও অবিবাহিত থাকতে হচ্ছে গ্রামটির মেয়েদের।