সবাই তাকে বলছে সদ্য ফোটা একটি ‘ফুলের মতো’

তার সৌন্দর্যের উপমা দিতে গিয়ে ফুলের কথাই মনে পড়ছে দর্শকদের। দর্শকরা স্নিগ্ধ, মিষ্টি, মনোরম নামের বিশেষণগুলোর মিল খুঁজে পাচ্ছেন তার সঙ্গে। পর্দায় তার উপস্থিতিতে দর্শকের মন ভরে যাচ্ছে ফুলের মতো সৌরভে। নিউজবাংলার প্রতিবেদক প্রতীক আকবরের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্তারিত।

ফুলকে যার উপমা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে তার নাম সাদিয়া আয়মান। ঈদে প্রকাশ পাওয়া ‘ফুলের নামে নাম’ নাটকে অভিনয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিয়ে চর্চা হচ্ছে ফুলের সঙ্গে তুলনা দিয়ে।

যারা সাদিয়া আয়মানকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চেনেন বা ফলো করেন, তারা জানেন সাদিয়া আয়মান নামটির মধ্যে ইংরেজি বর্ণ এস (S) রয়েছে। সাদিয়া জানান, এই এস (S) তার নামের অংশ নয়। অর্থাৎ এস (S) এর কোনো মানে নেই।

সাদিয়া বলেন, ‘ফেসবুকে একটু সমস্যা হচ্ছিল, একটা ভিন্ন নাম চাচ্ছিল, তাই এস (S) টা যুক্ত করা।’

অনেকে সাদিয়াকে নতুন মনে করছেন। হ্যাঁ, তিনিই নতুনই বটে, তবে প্রথম না। কাজ শুরু করেছেন ২০১৯ সালে। নাটকের মাধ্যমে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো। এরপর নামকরা সব ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন।

সিনেমাতেও দেখা যাবে তাকে। গিয়াস উদ্দিন সেলিম পরিচালিত কাজলরেখা সিনেমাটি মুক্তি পেলে বড় পর্দাতেও দেখা যাবে সাদিয়াকে। এর মধ্যে সিনেমায় কিছু অংশের শুটিংও করে ফেলেছেন তিনি।

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে তৃতীয় বর্ষে (৮ম সেমিস্টার) লেখাপড়া করছেন সাদিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেই ঢাকা আসা তার। জন্ম, বেড়ে ওঠা বরিশালে। সেখানেই করেছেন মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক। পরিবারে বাবা-মা আছেন, দুই ভাইয়ের এক বোন সাদিয়ার অবস্থান মেজো। এখন সবাই ঢাকাতেই থাকছেন বলে জানান সাদিয়া।

সাদিয়া বলেন, ‘আমার কখনই অভিনয় করার ইচ্ছা ছিল না। এমনকি আমি নাটক-সিনেমা ফ্রিকও ছিলাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর নির্মাতা ইমরাউল রাফাতের পোস্ট দেখে ওনাকে ফোন করেছিলাম।

“আমাকে বলা হয়েছিল সহশিল্পী হিসেবে কাজ করতে। এমন যে, গায়েহলুদের অনুষ্ঠান, সেখানে তো কিছু মানুষ লাগবে, আমি তারই অংশ হিসেবে কাজ করব। আমি আর কাজটি করিনি। তার কয়েক মাস পর রাফাত ভাই আমাকে ডাকেন ‘টু বি ওয়াইফ’ নামের একটি নাটকে কাজ করার জন্য। সেখানে আমার মূল চরিত্র ছিল।”

এভাবে শুরু। তারপর শুরু হলো বিজ্ঞাপনের কাজ। করোনার মধ্যে বাবা দিবসকে কেন্দ্র করে ফুডপান্ডার একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করার পর অভিনয় করার আকাঙ্ক্ষা তীব্র হয় সাদিয়ার। বলেন, ‘কাজটি খুব প্রশংসিত হয়। তখন আমার ইচ্ছে হতে থাকে, ভালো গল্পে কাজ করতে পারলে আরও কাজ করার।’

সাদিয়ার যে অনেক কাজের চাপ, তা না। অল্প অল্প করেই কাজ করতে চান তিনি। তার ওপর আবার ক্লাসের চাপ রয়েছে। কাজের কারণে ক্লাস নিয়েও মাঝে মাঝে বিপাকে পরতে হয়। ক্লাস ও কাজ একসঙ্গে পড়ে যায় মাঝে মাঝে। তখন ক্লাসটাকেই বিসর্জন দিতে হয়।

তবে পরিবারের সমর্থন থাকায় কিছুটা সুবিধা হয়েছে সাদিয়ার। তিনি বলেন, ‘পরিবার থেকে বরাবরই সমর্থন রয়েছে। বাবা মাঝে মাঝে বলেন, আমার অনেক প্রেশার বা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে, কাজ কমিয়ে দাও। তারপরও তারা খুশি।’

কাজ করতে এসে সবার ভালোবাসা পেয়ে সাদিয়াও এখন এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমি অভিনয় করতে চাই। ভালো ভালো কাজ করতে চাই। তবে অভিনয়কেই পেশা হিসেবে নেব কি না, তা নিয়ে এখনও চিন্তা করিনি। আমি আইন বিষয়ে লেখাপড়া করছি, এ বিষয়টি নিয়েও কাজ করার সুযোগ ও ইচ্ছা আমার আছে। আমার ইচ্ছা করপোরেট ল নিয়ে কাজ করার। কিন্তু সব নির্ভর করছে আগামীর পরিস্থিতির ওপর।’

‘ফুলের নামে নাম’ নাটকের পর অনেকেই সাদিয়াকে নতুন করে আবিষ্কার করেছেন। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপগুলোতে তার ছবি দিয়ে প্রশংসা করা হচ্ছে। বিষয়গুলো নজরে এসেছে সাদিয়ার।

তিনি বলেন, ‘অনেকে হাসির প্রশংসা করছেন। অভিনয়ের প্রশংসা করছেন অনেকে। আমার কাছে অভিনয়ের প্রশংসা বেশি ভালো লাগে। যতবারই অভিনয়ের প্রশংসা পাই, ততবারই কাজটি দেখি।’

পরিশ্রম করেই এতদূর এসেছেন সাদিয়া, পরিশ্রম করে আরও এগিয়ে যেতে যান সাদিয়া আয়মান। রুবেল আনুশ পরিচালিত নরসুন্দর নামের একটি কাজ শেষ করেছেন তিনি। জানালেন, শিগগিরই প্রকাশ পাবে ফিকশনটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *