রংপুরের হাড়িভাঙা আম আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাতকরণ শুরু

বাজারজাত শুরু হয়েছে রংপুরের বিখ্যাত হাড়িভাঙা আম। বুধবার (১৫ জুন) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাগান থেকে আম নামানো শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) থেকে বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে।

এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আড়তদাররা ভিড় করেছেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের পদাগঞ্জ এলাকায়। হাঁড়িভাঙা আমের জন্য খ্যাত পদাগঞ্জ এলাকা। দেশের বিভিন্ন স্থানে আম নিয়ে যাওয়ার জন্য আম বাজারে ইতোমধ্যে ব্যাংকের অস্থায়ী বুথ, কুরিয়ার সার্ভিস ও মালবাহী ট্রাকসহ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

বর্তমানে প্রতি কেজি আম বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। মৌসুমের শুরুতেই আমের দাম ভালো পেয়ে খুশি আম চাষীরা। এবার ২০০ কোটি টাকার আম বিক্রির আশা করছেন তারা।

একসময় রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় যেখানে শুধু ধান, তামাক, কিংবা সবজি চাষ হতো, সেই জায়গায় নিরব বিপ্লব নিয়ে এসেছে আঁশবিহীন, মিষ্টি ও সুস্বাদু আম হাড়িভাঙা।

রংপুর শহরের উপকণ্ঠে মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ, রানীপুকুর, বলদিপুকুর, পদাগঞ্জসহ এর আশপাশ এলাকায় প্রতিবছরের মতো এ বছরও হাঁড়িভাঙা আমের চাষ হয়েছে। ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে এসব আমবাগান। চাষিদের নিবিড় পরিচর্যায় অন্যবারের চেয়ে এবার আম চাষ কম হলেও ফলন ভালো হয়েছে বলে চাষিরা জানিয়েছেন।

হাঁড়িভাঙা আমের জন্য প্রসিদ্ধ এলাকা পদাগঞ্জ। এই নামে গ্রামে একটি হাট রয়েছে। পদাগঞ্জ এলাকার আমচাষিরা সাধারণত বাগান বিক্রি করেন না। তাঁরা প্রতিদিন গাছ থেকে আম পেড়ে পদাগঞ্জ হাটেই বিক্রি করেন। দূরদূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা এখানে সরাসরি এসে আম কিনে থাকেন।

আমচাষী রহমত আলী বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে তেমন ব্যবসা না হলেও এবার খুব ভালো ব্যবসা হবে। তবে ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে এবার আমের ক্ষতি হয়েছে।

মৌসুমি আম ব্যবসায়ী আকবর হোসেন বলেন, হাড়িভাঙ্গা আমের মূল ব্যবসা পদাগঞ্জ হাট। তবে হাটটির বর্তমান অবস্থা বেশ নাজুক, সামান্য বৃষ্টিতেই হাটু কাঁদা মাড়িয়ে বাজারে আসতে হয়। শত কোটি টাকার বানিজ্য হয় এই হাটটি ঘিরে, কিন্তু এই হাটের উন্নয়নের দিকে কারও দৃষ্টি নেই।

তিনি আরও বলেন, দেশ-বিদেশে সরবরাহে প্লাস্টিকের ক্যারেট, সুতলি, খাঁচা, পেপারসহ আনুষঙ্গিক জিনিসের দাম হুট করে বেড়ে গেছে গোটা রংপুরে। আম বহনের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও বেড়ে গেছে। অন্য সময়ের ৬০-৭০ টাকার ক্যারেট এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৮০ টাকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *